ওই বৈঠক নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “এটা খুব ভালো, গণতন্ত্রের শত ফুল ফুটেছে। এটা তো ভালো; এটাকে আমি বলবো, গণতন্ত্রের শত ফুল ফোটা। এটা তো গণতন্ত্রের বিউটি।
“আমি এটাকে বলবো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। তবে এ মেরুকরণ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।”
বি চৌধুরীর বারিধারার বাড়িতে ওই বৈঠকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জোটের বাইরে তৃতীয় জোট গড়ার কথা বলে আসা এই রাজনীতিকদের বৈঠকে সরকারের শরিক দল জাতীয় পার্টির এইচ এম এরশাদের ছোট ভাই ও দলটির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদেরও অংশ নেন।
সম্ভাব্য রাজনৈতিক জোট গঠনের এই আলোচনা-উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “নির্বাচনে আদর্শগত বিষয়টি মুখ্য নয়, এখানে অ্যালায়েন্সটা কৌশলগত; সময়ের প্রয়োজনে এবং নির্বাচনে জেতার জন্য.. আমি এটাকেই বলি গণতন্ত্রের বিউটি।
“গ্রুপিং, অ্যালায়েন্স এগুলো হতে থাক। মেরুকরণ হচ্ছে, এটি নির্বাচনকে সামনে রেখে হচ্ছে। এটি একটি ভাল দিক।”
এই বৈঠকে নেতিবাচক কিছু না দেখলেও এর পরিণতি দেখার অপেক্ষায় থাকা কাদের বলেন, তারা তো ওখানে ষড়যন্ত্র করছে না, জোট করছে, তাতে অসুবিধা কী?
“তবে এ অ্যালায়েন্সটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটিই দেখতে হবে। ওটা দেখতে হলে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।"
এর আগে গত ১৩ জুলাই রাতে রবের উত্তরার বাসায় বি চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকী, মান্না, সুব্রত চৌধুরীরা এক হয়েছিলেন, যাতে বাগড়া দিয়েছিল পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, “বাধা তো দেওয়া হয়নি; অতি উৎসাহী কেউ করেছে কি না, আমি সেটি জানি না। এ ধরণের কোনো বাধা সরকার বা দলের পক্ষে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে কখনো দেওয়া হয়নি “
২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বি চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকী ও রব এনডিএফ জোট গঠন করে বিএনপির পদাঙ্ক অনুসরণ করে তারাও ওই নির্বাচন বর্জন করেছিলেন।
তবে বর্জনের ঘোষণা দেওয়ার পরও নানা নাটকীয়তার পর সেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির প্রধান এরশাদ। সংসদের প্রধান বিরোধী দলটির তিনজন সদস্য বর্তমান সরকারে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন।
তবে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলন করে এরশাদ একইসঙ্গে সরকার ও বিরোধী দলে থাকার লজ্জ্বা ঘোঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এর আগেও তিনি মহাজোট ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন; বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটি জোটও গঠন করেছেন।
তবে সে বিষয়ে আওয়ামী লীগ যে মোটেই চিন্তিত নয়, তা স্পষ্ট করেই বললেন ওবায়দুল কাদের, “তারা সরকারে না থাকতে চাইলে চলে যেতে পারেন। তারা স্বেচ্ছায় সরকারে এসেছেন, তারা যেতে চাইলে যাবেন। আমরা এমন কোনো সংকটে পড়িনি যে, তারা চলে গেলে আমাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে।
“এখন তো কোন মহাজোট নেই, ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে তাদের তিনজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী সরকারে আছেন। এরশাদ সাহেব নিজেও তো প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত, পতাকাবাহী গাড়িতে তিনি যাচ্ছেন।”
তবে এরশাদের জাতীয় পার্টি সরকারের অংশীদারিত্ব ছাড়বে বলে মনে করেন না কাদের।
“আমার মনে হয় না… এমন কোনো ইশারা ইঙ্গিত পাইনি যে, তারা সরকার থেকে চলে যাবেন। আমার তো মনে হচ্ছে না।”
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে সরকার বা দলে কোনো আলোচনা এখনো হয়নি। তাহলে আমি কিভাবে প্রতিক্রিয়া দিব? আলোচনা হলে এরপর দিব।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন