শেখ হাসিনার জন্ম ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। জাতির জনক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গমাতা বেগম
ফজিলাতুন্নেসার পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার বড় তিনি।
১৯৬৮ সালে খ্যাতনামা পরমাণু বিজ্ঞানী ডঃ এম. এ
ওয়াজেদ মিয়ার সাথে বিয়ে হয় তাঁর।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাত্রিতে
সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু নিহত হলেও
তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে থাকায় বেঁচে যান তিনি ও
তাঁর বোন শেখ রেহানা। পরবর্তী ৬ বছর লন্ডন ও
দিল্লিতে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয় তাদের
দু'বোনকেই।
১৯৮১ সালে তাঁর অনুপস্থিতিতেই সর্বসম্মতিক্রমে
আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। সেই
বছরের ১৭ই মে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।
তিনিই প্রথম জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনের
বিরুদ্ধ আওয়াজ তুলেন। তাঁরই নেতৃত্বে আওয়ামী
লীগ বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম শুরু
করে যার ধারাবাহিকতায় ১৯৯১ সালে স্বৈরাচারী এরশাদ
সরকারের পতন ঘটে।
দেশে গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হবার পর ১৯৯১
সালের সাধারণ নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগ বৃহত্তম বিরোধীদল হিসেবে
আত্মপ্রকাশ করে। বিরোধীদলীয় নেতা
হিসেবে তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন বিএনপি
সরকারের দুঃশাসন আর নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে। অক্লান্ত
আন্দোলনের মুখে তৎকালীন বিএনপি সরকার বাধ্য
হয় সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই
নির্বাচন দিতে।
১৯৯৬ সালের ১২ই জুন অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বিপুল
ভোটে বিজয়ী হয় আওয়ামী লীগ এবং
জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন
করে। তাঁর সরকারের অন্যতম সাফল্য ছিল পার্বত্য
শান্তি চুক্তি। যুগ যুগ ধরে চলে আসা পাহাড়ি-বাঙালি
রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধে স্বাক্ষরিত হয় এই শান্তি
চুক্তি। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত
গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি এই সরকারের অন্যতম
আরেকটি সাফল্য।
২০০১ সালে দেশের দেশের ইতিহাসের অন্যতম
বিতর্কিত নীলনকশার নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে
হারিয়ে দেয়া। সরকার গঠন করে বিএনপি-জামায়াতের ৪
দলীয় জোট আর এবং দ্বিতীয় বারের মতো
বিরোধীদলীয় নেত্রী নির্বাচিত হন
জননেত্রী শেখ হাসিনা। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট
গ্রেনেড হামলা সহ বেশ কয়েকবার তাঁকে হত্যার
চেষ্টা চালানো হয়। তবে সব অপচেষ্টাকে নস্যাৎ
করে দিয়ে জোট সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে
আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন শেখ হাসিনা।
এরপর আসে ১/১১। তথাকথতি তত্ত্বাবধায়ক
সরকাররে ২ বছরের শাসনামলে গ্রেপ্তার করা হয়
জননেত্রী শেখ হাসিনা। রাজনীতিতে সৃষ্টি হয়
নেতৃত্বশুণ্যতা; হুমকি মুখে পড়ে দেশের
গণতন্ত্র। গণরোষের মুখে এক পর্যায়ে তাঁকে
ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় তৎকালীন সেনা সমর্থিত
সরকার। বিরাজমান গণতন্ত্রের সঙ্কট কাটিয়ে ২০০৮
সালের ২৯শে ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল
ভোটে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ
নেতৃত্বাধীন মহাজোট। গণতন্ত্রের নতুন এ
সন্ধিক্ষনে দ্বিতীয় বারের মতো দেশের
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন জননেত্রী শেখ হাসিনা।
গণতন্ত্র ও উন্নয়নের নতুন এক যাত্রা শুরু করে
বাংলাদেশ।
সুযোগ্য নেতৃত্ব এবং অসাধারণ ধীশক্তির
স্বীকৃতি হিসেবে বহু আন্তর্জাতিক পুরষ্কার এ
সম্মাননা অর্জন করেছেন শেখ হাসিনা। তার মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হলো:
সম্মানসূচক ডক্টর অব ল, ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান
ডক্টর অব লিবারেল আর্টস, এবারেট ডান্ডি
বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্য
দেশিকাত্তোম, বিশ্বভারতী, ভারত
সম্মানসূচক ডক্টর অব ল, অস্ট্রেলিয়া ন্যাশনাল
ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়া
সম্মানসূচক ডক্টর অব হিউমান লেটার্স, ব্রিজপোর্ট
বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্য
সম্মানসূচক ডক্টর অব ল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ফেলিক্স হোফে বোইনি শান্তি পুরষ্কার
পার্ল এস বাক পদক, ম্যাকন উইমেনস কলেজ,
যুক্তরাষ্ট্র
মাদার তেরেসা পদক
পল হ্যারিস ফেলো, আন্তর্জাতিক রোটারি
ফাউন্ডেশন